প্রতিবেশীর গাছ থেকে লেবু পেরেছিল তিন শিশু। এরপর বকা খাওয়ার আশঙ্কায় পালিয়ে ২২ কিমি পর্যন্ত পথ পাড়ি দিল চা বাগানের তিন শিশু। ধূপগুড়ি ব্লকের ঠাকুরপাট এলাকায় তাদের উদ্দেশ্যহীন ভাবে ঘুরতে দেখে স্থানীয় কিছু মানুষের মনে সন্দেহ দানা বাঁধে। তাঁরাই তাদের আটকে খবর দেয় গ্রামীন পুলিশকে। এরপর গ্রামীন পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে তিন শিশুকে জিঞ্জাসাবাদ করে জানতে পারে, তিনজনের বাড়ি বিন্নাগুড়ি চা বাগানের ভগত্ লাইনে।
শিশুরা জানিয়েছে, সকালে প্রতিবেশীর গাছ থেকে লেবু পেরে খেয়েছিল ওই তিনজন। বকাঝকা খাওয়ার আশঙ্কায় তারা ৭-৮ কিমি রাস্তা পায়ে হেঁটে বিন্নাগুড়ি থেকে গয়েরকাটাতে যায়। সেখান থেকে টোটোতে চেপে ১২ কিমি পেরিয়ে ঠাকুরপাটে পৌঁছায়। এরপর ফের ৪ কিমি পায়ে হেঁটে খুট্টিমারী এলাকায় একজনের মামার বাড়ি পৌঁছায়। কিন্তু সেখানেওবাড়িতে কাউকে না পেয়ে আবার ৪ কিমি পথ পেরিয়ে ফের ঠাকুরপাট বাজারে আসে। পুলিশ জানিয়েছে, ঠিক ওই সময়েই স্থানীয়রা তাদের আটক করে। এরপর স্থানীয় সিভিক ভলান্টিয়ার বিপুল রায় মারফত খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছায় ধূপগুড়ি থানার পুলিশ।
জানা গিয়েছে, ওই তিন শিশুর নাম রমিত ওরাও(৯), সাহিল ওরাও(১০) ও জয়দীপ ওরাও(১১)। তারা প্রত্যেকেই প্রতিবেশী। তাদের বাবা, মা চা বাগানে কাজ করেই দিন গুজরান করেন। ধূপগুড়ি থানার পুলিশ আধিকারিকরা তিন শিশুর পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনজনের অভিভাবক মানতি ওরাও, পঞ্চমী ওরাও এবং গেন্দ্রা ওরাও থানায় এসে তার পুত্র সন্তানকে নিয়ে যান তাদের ছেলেদের নিয়ে যান।
ঘটনায় মানতি ওরাও বলেন, 'কাজের থেকে বাড়িতে ঢুকে খোঁজাখুঁজি শুরু করলে জানতে পারি রমিত নিখোজ। এরপর থানা থেকে ফোন করলে আমরা গাড়ি জোগার করে থানায় যাই।পুলিশের এই তত্পরতায় আমরা আমাদের ছেলেদের পেলাম। পুলিশকে অনেক ধন্যবাদ।' ঘটনায় জলপাইগুড়ি পুলিশ সুপার দেবর্ষি দত্ত বলেন, 'আমরা অত্যন্ত আনন্দিত এই পরিবারগুলির হাতে তাদের সন্তানকে তুলে দিতে পেরে।ওই সিভিক ভলেন্টিয়ারকে পুরস্কৃত করা হবে। আপনারা যে কোনও প্রয়োজনে পুলিশের সাহায্য নিন। জেলা পুলিশ সাহায্য করার জন্য সবসময় প্রস্তুত।'
Post A Comment:
0 comments so far,add yours