জাতির জনক মহাত্মা গান্ধীর ডাকে ১৯৪২ সালে আজকের দিনে সারাদেশ জুড়ে শুরু হয়েছিল 'ভারত ছাড়ো' আন্দোলন। ব্রিটিশদের ভারত ছাড়ার ডাক দিয়ে আন্দোলন শুরু করেন মহাত্মা গান্ধী। এই আন্দোলনে অনেকের মতোই যোগ দিয়েছিলেন কলকাতার কার্তিক চন্দ্র দত্ত। ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের সংগ্রামী কার্তিকবাবুর বাসভবনে এসে পৌঁছাল রাষ্ট্রপতির তরফে সম্মানপত্র। যেহেতু এইদিনেই ভারত ছাড়ো আন্দোলনের সূচনা হয়েছিল, তাই একইদিনে জাতীয় সম্মান পেয়ে আপ্লুত কার্তিক দত্তের পরিবার। প্রতিবছরের মতো এই বছরও এই সম্মান পেলেন কার্তিকবাবু। যদিও ৯৭ বছর বয়সি কার্তিকবাবুর স্মৃতির পাতায় মুছে গেছে একাধিক ঘটনা। আগের কথা কিছুই স্মরণে নেই কার্তিকবাবুর। বার্ধক্যজনিত কারণে জীবনের বহু স্মৃতিই নষ্ট হয়ে গেছে তাঁর। কসবার দত্ত পরিবারের অনেকেই যুক্ত ছিলেন ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের সঙ্গে। বড় ও মেজো ভাইয়ের দেখাদেখি ছাত্রজীবন থেকেই স্বাধীনতা সংগ্রামের সঙ্গে যুক্ত হওয়ার বাসনা জাগে। তাঁর বাড়িতে ছিল কংগ্রেস নেতাদের আনাগোনা। সেই থেকেই স্বাধীনতা সংগ্রামে যুক্ত হওয়ার বাসনা নিয়ে দাদাদের অনুসরণে বন্ধু-বান্ধবরা মিলে জড়ো হতেন একাধিক মিটিং-মিছিলে। এইভাবে পথ চলা শুরু কার্তিকবাবুদের। তারপর আসে ভারত ছাড়ো আন্দোলন। গুপ্ত চিঠি নিয়ে পাড়ি দেন অধুনা বাংলাদেশের ঢাকার চন্দ্রকান্ত ভূষণ রায়চৌধুরীর কাছে। ওখানকার গান্ধী ময়দানে চলে ইংরেজদের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ। জেলও খাটেন কার্তিকবাবুরা।
স্বাধীনতার পরে প্রতি বছরই ৯ আগস্ট স্বাধীনতা সংগ্রামীদের সম্মানিত করে ভারত সরকার। দিল্লীতে সেই অনুষ্ঠানে যোগ দেন স্বাধীনতা সংগ্রামীরা। রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে সম্মানপত্র নেন তাঁরা। তবে গত ২ বছর করোনার কারণে বাড়িতেই চলে আসে সেই সম্মানপত্র। স্বরাষ্ট্র দফতরের পক্ষ থেকে এই সম্মান বাড়িতে পাঠানো হয়েছে। এই সম্মানে খুশি পরিবার। কার্তিকবাবুর পুত্রের কথায়, 'বাবার কাজে গর্বিত। ভারত সরকারের এই সম্মান প্রতিবছরই পেয়ে থাকেন বাবা। রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী প্রতিবছরই সংবর্ধনা দেন বাবাদের। সব রাজ্য থেকে পাঁচজনকে এই সময় দিল্লি নিয়ে যাওয়া হয়।' কেন্দ্রের তরফে এখন শুধুমাত্র ট্রেনের পাসটুকু পান কার্তিকবাবুরা। তবে বয়েসজনিত কারণে কোথাও যেতেই পারেন না তিনি। সম্বল কিছু ঝাপসা হয়ে যাওয়া স্মৃতির পাতা আর কেন্দ্রের দেওয়া প্রতি বছরের এই সম্মান।
Back To Top
Post A Comment:
0 comments so far,add yours