গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার লড়াইয়ে উত্তাল হংকং (Hong Kong)। একইসঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে চিনের (China) দমনপীড়ন। নিজের ভয়াবহ স্বরূপ প্রকাশ্যে এনে এবার গণতন্ত্রকামীদের জঙ্গি বলে দাগিয়ে দিচ্ছে কমিউনিস্ট দেশটি। ছাড়া পাচ্ছে না স্কুলের ছাত্ররাও।
আফগানিস্তান থেকে নাগরিকদের ফিরিয়ে আনতে চলেছে ভারতগত ১ জুলাই অর্থাত্ চিনের কাছে হংকং হস্তান্তরের বর্ষপূর্তির দিন স্বশাসিত প্রদেশটিতে ৫০ বছরের এক ব্যক্তি এক পুলিশকর্মীকে ছুরি মারার পরে আত্মহত্যা করেন। পুলিশের দাবি, এটি আসলে জঙ্গি হামলা। উত্তেজনার পারদ আর চড়িয়ে গত শুক্রবার সেই হামলার জায়গায় বেশ কিছু মানুষ জড়ো হয়ে ফুল দিয়ে নিহত হামলাকারীকেই শ্রদ্ধা জানান বলে সরকারপক্ষের অভিযোগ। তা নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেন হংকংয়ের চিনপন্থী প্রশাসক ক্যারি লাম। তিনি বলেন, 'দীর্ঘদিন ধরে সাধারণ মানুষ বেআইনি পথে ভুল ধারণার বশবর্তী হয়ে চলেছেন।' এদিকে, লামের ভাষণের পরই মঙ্গলবার পুলিশ জানায়, সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপে বিস্ফোরক ব্যবহারের ষড়যন্ত্র করার অভিযোগে ৬ স্কুলপড়ুয়া-সহ ৯ জনকে গ্রেপ্তার করেছে তারা। এদের বয়স ১৫ থেকে ৩৯ বছরের মধ্যে। সকলেই 'রিটার্নিং ভ্যালিয়েন্ট' নামে একটি স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠীর সদস্য। পুলিশের অভিযোগ, আদালত, সরকারি অফিসে বোমা হামলা চালানোর পরিকল্পনা করছিল ধৃতরা।
বিশ্লেষকদের মতে, গণতন্ত্রকামীদের শায়েস্তা করতে এবার সাজানো মামলা করছে চিনা পুলিশ। স্কুলছাত্রদের বিরুদ্ধেও মিথ্যা মামলা পেশ করা হয়েছে। ১৯৯৭ সালে ব্রিটেন যখন চিনের হাতে হংকং হস্তান্তর করে, তখন শহরের নিজস্ব চরিত্র, স্বাধীনতা, সাংস্কৃতিক বৈশিষ্ট্য রক্ষায় রাজি হয়েছিল বেজিং। কিন্তু শর্ত ভেঙে তারা যে দখলদারি কায়েম করতে চাইছে, তা নিয়ে বেশ কয়েকদিন ধরেই তোলপাড় চলছে। উল্লেখ্য, ২০১৯ সালে হংকং থেকে সন্দেহভাজন অপরাধীদের চিনে প্রত্যর্পণের জন্য আনা একটি বিল নিয়ে প্রবল বিক্ষোভের মুখে পড়েন লাম। শেষমেশ সেটি বাতিল করতে বাধ্য হয়েছিলেন তিনি। কিন্তু তারপরেও হংকংয়ের জাতীয় নিরাপত্তা আইন পাশ হয়েছে। বিচ্ছিন্নতাবাদ, চিন সরকারের বিরোধিতা, সন্ত্রাসবাদী কাজকর্ম, জাতীয় সুরক্ষা বিপন্ন করতে বিদেশিদের সঙ্গে জোট বাঁধার মতো অপরাধের শাস্তির ব্যবস্থা করা হয়েছে নয়া আইনে। হংকংয়ের রাজনৈতিক আন্দোলনকারীদের অভিযোগ, ওই আইন আদতে তাঁদের দমন করার কাজেই ব্যবহার করা হবে।
Post A Comment:
0 comments so far,add yours