চলতি বছরের শুরুর দিকে কিছুটা স্বাভাবিক হয়েছিল পরিস্থিতি। লকডাউন উঠেছিল, মানুষ আবার রাস্তায় বেরিয়েছিল। বাসের চাকা ঘুরেছিল, ফিরছিল চেনা ছন্দে । কিন্তু কিছুদিন যেতে না যেতেই করোনার দ্বিতীয় ঢেউ চলে আসে। আবার বন্ধ হয়ে যায় রাস্তা, ট্রেন । গড়াচ্ছে না বাসের চাকাও। সবকিছু থমকে গিয়েছে আবার। পশ্চিম মেদিনীপুরের অন্যতম ব্যস্ত শহর ঘাটাল। কিন্তু কড়া বিধিনিষেধ জারির পর থেকে বাসস্ট্যান্ডে সারি সারি দাঁড়িয়ে বিভিন্ন রুটের দূরপাল্লার বাস। স্বল্প দূরত্বের বাসগুলিরও একই হাল। সব এখন ঠাঁয় দাঁড়িয়ে ঘাটাল সেন্ট্রাল বাসস্ট্যান্ডে। বাসে তালা-চাবি মেরে চলে গিয়েছেন বাসের চালক, কন্ডাকটর ও খালাসিরা।

কেউ কেউ এসে মাঝে মধ্যে ঢুঁ মেরে যাচ্ছেন। দেখে যাচ্ছেন তাঁদের বাস ঠিকঠাক আছে কি না।

আবার কেউ বৃষ্টির জন্য বাসের ক্ষতি যাতে না হয়, তাই বাসের ছাদের উপরে আস্তরণ দিয়ে যাচ্ছেন। চরম দুশ্চিন্তায় দিন কাটাচ্ছেন পরিবহণের সঙ্গে যুক্ত মানুষরা। তার উপর লাগামহীনভাবে বাড়ছে পেট্রোল-ডিজ়েলের দাম, সেঞ্চুরির কাছাকাছি পৌঁছে গিয়েছে জ্বালানি। ফলে বাস পরিষেবা চালু হলেও লাভ হবে কি না,তা নিয়ে কুল কিনারা পাচ্ছেন না পরিবহণ কর্মী থেকে শুরু করে বাস মালিকরা। পরিস্থিতি ক্রমেই শোচনীয় হয়ে উঠছে পরিবহণ কর্মীদের জন্য। একদিকে জ্বালানির আকাশছোঁয়া দাম, তার উপর আবার করোনার তৃতীয় ঢেউয়ের ভ্রুকুটি। পরিবহণ কর্মীদের ভবিষ্যত্‍ নিয়ে উদ্বিগ্ন বাস অ্যাসোসিয়েশনগুলিও । পরিবহণ বন্ধ থাকায় অধিকাংশ বাসকর্মীই পেটের টানে কেউ রাজমিস্ত্রির যোগাড়ে বা একশো দিনের কাজে তো আবার কেউ দিনমজুরির কাজে যুক্ত হয়েছেন।

ঘাটাল বাস ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে আবেদন, তিনি যেন বাস মালিক ও শয়ে শয়ে কর্মীদের দুরাবস্থা নিয়ে কিছু ভাবেন। এই পরিবহণ শিল্পের সঙ্গে যুক্ত শুধু বাসকর্মীরাই নন,ওতপ্রোতভাবে রুজি রোজগারে জড়িত গ্যারেজ, যন্ত্রপাতির দোকান থেকে আরও অনেকে। তাদেরও রুজিতে টান পড়ছে।লোকাল ট্রেন আপাতত চালু হচ্ছে না বলে জানিয়ে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ১ জুলাই থেকে বাস পরিষেবা চালু হবে, তবে ৫০ শতাংশ যাত্রী নিয়ে।
Share To:

kakdwip.com

Post A Comment:

0 comments so far,add yours