মাত্র এক টাকায় এক পোয়া দুধ। এই লকডাউন পরিস্থিতিতে দুস্হ শিশু-কিশোরদের পুষ্টির কথা ভেবে নামমাত্র দামে এই দুধের ব্যবস্থা করেছে পূর্ব বর্ধমান জেলার মেমারির পাল্লারোড পল্লী মঙ্গল সমিতি। প্রতিদিন বিকেলে দেওয়া হচ্ছে এই দুধ। প্রতিদিন তিনশো জনকে এই দুধ দেওয়া হচ্ছে বলে পল্লীমঙ্গল সমিতির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। এই লকডাউনের সময় সস্তায় দুধ মেলায় খুশি এলাকার বাসিন্দারা। এই ধরনের উদ্যোগ নেওয়ার জন্য পল্লী মঙ্গল সমিতি সদস্যদের সাধুবাদ জানিয়েছেন তারা।

জামালপুর, জৌগ্রাম, পাল্লা রোড ও তার আশপাশ এলাকায় গো পালন করে জীবিকা নির্বাহ করেন অনেকেই। এলাকায় প্রচুর দুধ উৎপাদন হয়। সেই দুধ কিনে নিয়ে যায় বিভিন্ন সংস্থা। তাঁরা তা প্যাকেটজাত করে বিক্রি করে। কিন্তু লকডাউনের কারণে চাহিদা কমে যাওয়ায় হঠাৎ করে দুধ কেনা বন্ধ রেখেছে সংস্থাগুলি। দুধ উৎপাদকদের কোনও কিছু না জানিয়ে তাঁরা দুধ কেনা বন্ধ করে দিয়েছে। এর ফলে প্রচুর পরিমাণ দুধ নিয়ে সমস্যায় পড়েছেন দুধ উৎপাদকরা। সেই দুধ নষ্ট হওয়া রুখতে উৎপাদকদের পাশে এসে দাঁড়িয়েছে পল্লী মঙ্গল সমিতি।
পল্লীমঙ্গল সমিতির সম্পাদক সন্দীপন সরকার বলেন, আমরা উদ্বৃত্ত দুধের উৎপাদন খরচটুকু দিয়ে কিনে নিচ্ছি। তাতে দুধ উৎপাদকরা কম দামে হলেও তা বিক্রি করতে পারছেন। প্রচুর পরিমাণ দুধ নষ্ট হওয়া থেকে রক্ষা পাচ্ছে। ঠিক তেমনই এলাকার দরিদ্র বাসিন্দারা লকডাউনে কাজ হারিয়ে আর্থিক সংকটের মধ্যে পড়েছেন। বাড়ির শিশুর দুধটুকু কেনার সামর্থ্যও হারিয়েছেন তাঁরা। অথচ এই করোনা পরিস্থিতিতে পুষ্টিকর খাবার প্রয়োজন। সে কথা মাথায় রেখেই দরিদ্র পরিবারের শিশুদের জন্য এক টাকা পোয়া দরে দুধ বিক্রির এই পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।

প্রতিদিন তিনশো জনকে এই দুধ দেওয়া হচ্ছে। বিকেল সাড়ে চারটা থেকে সাড়ে পাঁচটা পর্যন্ত এক ঘন্টা শারীরিক দূরত্ব বজায় রেখে দুধ সংগ্রহ করছেন বাসিন্দারা। উল্লেখ্য,পূর্ব বর্ধমান জেলায় প্রচুর পরিমাণ ছানা উৎপন্ন হয়। সেই ছানা বর্ধমান, দুর্গাপুর, আসানসোল, কলকাতার মিষ্টির দোকানের চাহিদার অনেকটাই পূরণ করে। লকডাউনে মিষ্টির দোকান খোলা থাকলেও বিক্রি কম হওয়ায় ছানার চাহিদা কমেছে। আবার পরিবহণ সমস্যার কারণে ছানা বাইরে পাঠাতে পারছেন না উৎপাদকরা। ফলে প্রতিদিনই লোকসানের বহর বেড়েই চলেছে বলে জানিয়েছেন ছানা উৎপাদকরা।
Share To:

kakdwip.com

Post A Comment:

0 comments so far,add yours