প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর কাছে আর্জি জানিয়েও লাভ হয়নি। কৃষি মন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকও ব্যর্থ হয়েছে। এবার বাধ্য হয়ে প্রধানমন্ত্রীর মা হীরাবেন মোদীকে চিঠি লিখলেন কৃষকরা।
দেড় বছরের জন্য তিনটি কৃষি আইন স্থগিত করার কেন্দ্রীয় সরকারের প্রস্তাব খারিজ করেছেন আন্দোলনরত কৃষকরা৷
তাঁদের দাবি, তিনটি বিতর্কিত কৃষি আইন প্রত্যাহার করতেই হবে, একইসঙ্গে উৎপাদিত ফসলের যথাযথ ন্যূনতম সহায়ক মূল্যের জন্য নতুন আইন প্রণয়ণ করতে হবে৷
তাঁরা প্রধানমন্ত্রীর মা'কে অনুরোধ করেছেন, কৃষি আইন প্রত্যাহারের জন্য তিনি যেন তাঁর ছেলেকে বোঝান।
কেন্দ্রের উপর চাপ বহাল রেখেছেন কৃষকরা।দেড় বছরের জন্য তিনটি কৃষি আইন স্থগিত করার কেন্দ্রীয় সরকারের প্রস্তাব খারিজ করেছেন আন্দোলনরত কৃষকরা৷ তাঁদের দাবি, তিনটি বিতর্কিত কৃষি আইন প্রত্যাহার করতেই হবে, একইসঙ্গে উৎপাদিত ফসলের যথাযথ ন্যূনতম সহায়ক মূল্যের জন্য নতুন আইন প্রণয়ণ করতে হবে৷ গত বৃহস্পতিবার সংস্থার সাধারণ সভার পরে নিজেদের অবস্থান জানিয়ে দিয়েছে সংযুক্ত কিষান মোর্চা৷ এবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর মা হীরাবেন মোদীকে চিঠি লিখলেন আন্দোলনকারী কৃষকরা। সেই চিঠিতে তাঁরা প্রধানমন্ত্রীর মা'কে অনুরোধ করেছেন, কৃষি আইন প্রত্যাহারের জন্য তিনি যেন তাঁর ছেলেকে বোঝান।
চিঠিতে কৃষকরা লিখেছেন, 'অত্যন্ত দুঃখের সঙ্গে জানাচ্ছি, দেশের অন্নদাতারা আজ রাস্তায় পড়ে রয়েছেন। আপনি নিশ্চয় বিষয়টি জানেন। রাজধানীর প্রবল ঠাণ্ডার মধ্যে আমরা, শিশু, মহিলারা দিনের পর দিন রাস্তায় পড়ে রয়েছি। অনেক কৃষক মারা যাচ্ছেন।
অনেকেই আবার প্রতিবাদে আত্মহত্যা করছেন। এই পরিস্থিতিতে আমরা ভবিষ্যতের কথা ভেবে শঙ্কিত। কিন্তু আমরা জানি, মায়ের কথা ছেলে ফেলে দিতে পারবেন না। আপনি মা হয়ে প্রধানমন্ত্রী ছেলেকে বোঝান। দেশের কৃষকদের ক্ষতি করবে, এটা সরকার মানতেই চাইছে না। কিন্তু আপনি বোঝান প্রধানমন্ত্রীকে। এখন আপনিই আমাদের একমাত্র ভরসার জায়গা।'
এরই মধ্যে, প্রজাতন্ত্র দিবসের আগে চার কৃষক নেতাকে খুন করার জন্য ১০ জনকে নাকি প্রশিক্ষণ দিয়েছে খোদ পুলিশই! সেই সঙ্গে ২৬ জানুয়ারির ট্র্যাক্টর র্যালিতে অশান্তি তৈরির ছক কষেছে, শুক্রবার রাতে সিংঘু সীমানার বিক্ষোভস্থল থেকে ধরা পড়া এর যুবকের বয়ানে উঠে এসেছে এমনই বিস্ফোরক তথ্য।
বিক্ষোভকারী চাষিরা জানিয়েছেন, মুখ ঢাকা ওই যুবকের সন্দেহজনক গতিবিধি দেখেই পাকড়াও করা হয়। চাপের মুখে পুলিশের এই ষড়যন্ত্রের কথা ফাঁস করেছে সে। মিডিয়ার সামনে স্বীকারোক্তি দেওয়ার পর ধৃতকে হরিয়ানা পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়। হরিয়ানার মুখ্যমন্ত্রী মনোহর লাল খাট্টারকে এ ব্যাপারে প্রশ্ন করা হলে তিনি জানান, জিজ্ঞাসাবাদ শেষে পুলিশই যা বলার বলবে।
বিতর্কিত তিন কৃষি আইন বাতিল এবং ন্যূনতম সহায়ক মূল্যের আইনি আশ্বাসের দাবিতে গত নভেম্বর থেকে দিল্লির সীমানায় বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন উত্তরপ্রদেশ, পাঞ্জাব, হরিয়ানা, রাজস্থান-সহ নানা রাজ্য থেকে আসা চাষিরা। কেন্দ্র দেড় বছরের জন্য এই তিন কৃষি আইন স্থগিত রেখে আলোচনার প্রস্তাব দিয়েছিল, কিন্তু কৃষকরা আইন প্রত্যাহার ছাড়া আর কোনও শর্তে রাজি নয়। এই পরিস্থিতিতে ২৬ জানুয়ারি দিল্লির বুকে ট্র্যাক্টর র্যালির ঘোষণা করেছেন প্রতিবাদী কৃষকরা। আদালতে সরকার পক্ষ জানিয়েছিল, প্রজাতন্ত্র দিবসে দিল্লির বুকে কৃষকদের র্যালি করতে দিলে আইন-শৃঙ্খলার সমস্যা দেখা দিতে পারে, কিন্তু এই র্যালির অনুমতি নিয়ে আদালত নাক গলাতে চায়নি। সে দায়িত্ব পুলিশ-প্রশাসনের উপরই ন্যস্ত করেছিল। ঘটনাচক্রে শনিবারই কৃষকদের ট্র্যাক্টর র্যালির অনুমতি দিয়েছে দিল্লি পুলিশ। রাজধানীর বুকে ১০০ কিলোমিটার অবধি রাস্তায় যেতে পারবেন তাঁরা।
কিন্তু সেই অনুমতির আগের দিন রাতেই প্রকাশ্যে এসেছে এই গভীর ষড়যন্ত্রের তত্ত্ব। শুক্রবারই কেন্দ্রের সঙ্গে কৃষক প্রতিনিধিদের একাদশ বৈঠক ব্যর্থ হয়েছে। শুক্রবার রাতে মুখ ঢাকা ওই যুবককে মিডিয়ার সামনে হাজির করান চাষিরা। বছর কুড়ির সেই যুবকের বক্তব্য, 'আমাদের প্ল্যান ছিল, ২৬ জানুয়ারি দিল্লি পুলিশ যখন প্রতিবাদকারীদের আটকানোর চেষ্টা করবে, তখন ফার্স্ট লাইন থেকে গুলি চালানো হবে। আমাদের বলা হয়েছিল, কৃষক বিক্ষোভে অশান্তি তৈরি করতে যাতে প্রতিবাদকারীদের নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না বলে পুলিশ গুলি চালাতে পারে। আর ২৪ জানুয়ারি বিক্ষোভস্থলেই চার জনকে গুলি করে মারার প্ল্যান ছিল। রাই থানার স্টেশন হাউস অফিসার প্রদীপ সিং আমাদের প্রশিক্ষণ দিয়েছিলেন। উনি যখনই আমাদের সঙ্গে দেখা করতে আসতেন, মুখ ঢেকে আসতেন।' যুবকের দাবি, দুই মহিলা-সহ আরও ৯ জন এই ষড়যন্ত্রে সামিল। এ দিকে পুলিশ সূত্রে খবর, রাই থানার এসএইচও আদতে বিবেক মালিক এবং সেখানে প্রদীপ নামের কোনও অফিসারই নেই! তা হলে কার কথা বলছে যুবক? ধৃতের কাছে কোনও অস্ত্রও মেলেনি। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ চালাচ্ছে পুলিশ।
Post A Comment:
0 comments so far,add yours