বিভিন্ন টিভি চ্যানেলে রাত পর্যন্ত মহাগঠবন্ধনের ঝুলিতে দেখানো হয়েছিল ১১২টি আসন। তখন আরজেডি-র দাবি করেছিল, তাদের জোট ১১৯টি আসন জিতেছে। কিন্তু রিটার্নিং অফিসার জয়ের শংসাপত্র দিচ্ছেন না। আরজেডির রাজ্যসভার সাংসদ মনোজ ঝার অভিযোগ, কম ব্যবধানের আসনগুলিতে প্রশাসনকে কাজে লাগিয়ে গণনায় কারচুপি করছেন মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার। এত বড় অভিযোগ ওঠা সত্ত্বেও নীরব এনডিএ।
জোটের বিজয় কামনায় দিল্লিতে বিজেপির সদর দফতরে আজ বসেছিল হনুমান চালিশা পাঠের আসর। কথা ছিল রাতে আসবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তিনি ও-মুখো হননি। তবে টুইট করেছেন, ‘বিহারে প্রত্যেকটি ভোটার বুঝিয়ে দিয়েছেন যে উন্নয়নই তাঁদের একমাত্র অগ্রাধিকার।’ জোটের বিজয় কামনায় দিল্লিতে বিজেপির সদর দফতরে আজ বসেছিল হনুমান চালিশা পাঠের আসর। কথা ছিল রাতে আসবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তিনি ও-মুখো হননি। তবে টুইট করেছেন, ‘বিহারে প্রত্যেকটি ভোটার বুঝিয়ে দিয়েছেন যে উন্নয়নই তাঁদের একমাত্র অগ্রাধিকার।’
সূত্রের খবর, বিজেপি জেডিইউয়ের থেকে বেশি আসন পাওয়ায় আগের ঘোষণা মতোই নীতীশকে মুখ্যমন্ত্রী করা হবে, না কি ওই পদের দাবি জানানো হবে, তা নিয়ে দলে এক প্রস্ত আলোচনা হয়েছে।
কথায় বলে, সকাল দেখেই বোঝা যায় দিনটা কেমন যাবে। কথাটা যে সব সময় খাটে না, আজই তার সবচেয়ে বড় প্রমাণ। আজ ভোট গণনা শুরুর প্রথম দেড়-দু’ঘণ্টায় হইহই করে এগিয়ে যাচ্ছিলেন আরজেডি প্রার্থীরা। সকাল দশটা-সাড়ে দশটার মধ্যেই বাজি ফাটানো, মিষ্টি বিতরণ শুরু হয়ে যায় পটনার বীরচাঁদ পটেল পটের আরজেডি দফতরে। ভিড় জমতে থাকে তেজস্বী যাদবের বাড়ির সামনে। কিন্তু এগারোটা বাজার পর থেকে ছবিটা পাল্টাতে শুরু করে। পোস্টাল ব্যালট শেষ করে শহুরে এলাকায় ভোট গোনা শুরু হতেই প্রবল ভাবে লড়াইতে ফিরে আসে এনডিএ। বেলা বারোটার মধ্যে মহাগঠবন্ধনকে পিছিয়ে ফেলে সামান্য এগিয়ে যায় এনডিএ। তার পর সারা দিন ধরে চলে উত্থান-পতন।
একে গণনায় দেরি, তার মধ্যে প্রতিপক্ষ শিবিরের পরস্পরের মধ্যে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের কারণে আজ নজিরবিহীন ভাবে চারটি সাংবাদিক বৈঠক করে নির্বাচন কমিশন। কমিশনের পক্ষ থেকে স্বচ্ছতার সঙ্গে ভোট গোনার দাবি করা হলেও, রাতে ভোট চুরির অভিযোগে সরব হন আরজেডি নেতৃত্ব। দলের পক্ষ থেকে টুইট করে বলা হয়, ১১৯টি আসনে জোটের প্রার্থীরা জিতে গিয়েছেন। মনোজ ঝা বলেন, ‘‘ওই প্রার্থীদের রিটার্নিং অফিসার অভিনন্দন জানালেও তাদের জেতার শংসাপত্র দেওয়া হচ্ছে না। পরিবর্তে মৌখিক ভাবে বলা হচ্ছে আপনারা হেরে গিয়েছেন। অথচ নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইটেও ওই প্রার্থীদের জয়ী বলে দেখানো হচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রী নিজের কিছু পেটোয়া অফিসারের সাহায্যে জেলাশাসককে প্রভাবিত করে ভোটের ফল পরিবর্তন করার চেষ্টা করছেন।’’
নীতীশের বিরুদ্ধে ভোট চুরির অভিযোগে সরব হয়েছে কংগ্রেস ও বামেরা। কংগ্রেসের অভিযোগ বৈশালী জেলার রাজাপাকর আসনে এবং সিপিআই (এমএল)-এর অভিযোগ ভোরে, আরা, ধরাউন্ধা আসনে তাঁদের প্রার্থীরা জেতা সত্ত্বেও শংসাপত্র দেওয়া হয়নি। ওই আসনগুলিতে পুনর্গণনার পাশাপাশি ভিভিপ্যাট মেশিনে যে স্লিপ জমা পড়েছে তা-ও গোনার আর্জি জানানো হয়েছে। বিরোধীদের ওই অভিযোগ প্রসঙ্গে নির্বাচন কমিশনের বক্তব্য জানতে চাওয়া হলেও রাত পর্যন্ত কোনও জবাব পাওয়া যায়নি।
ভোট ফলাফলের প্রাথমিক বিশ্লেষণ বলছে, নীতীশের ভরাডুবির অন্যতম কারণ হল প্রতিষ্ঠানবিরোধিতা। তার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে চিরাগ পাসোয়ানের বিরোধিতা। এনডিএ ছেড়ে শুধু জেডিইউয়ের বিরুদ্ধে প্রার্থী দেওয়া লোকজনশক্তি পার্টি নিজেরা মাত্র একটি আসনে জিতলেও ভোট কেটে অন্তত ২৫ থেকে ৩০টি আসন হারিয়ে দিয়েছে জেডিইউ-কে।
অন্য দিকে, বিরোধী জোটকে আবার ধাক্কা দিয়েছে আসাদউদ্দিন ওয়েইসির দল এমআইএম। উত্তর বিহারের মুসলিম অধ্যুষিত সীমাঞ্চল এলাকায় ডজনখানেক আসনে মহাগঠবন্ধনের প্রার্থীদের জেতা ভন্ডুল করে দিয়েছে তারা। অনেকেরই মতে, বিজেপির হাতে তামাক খেয়েই মহাগঠবন্ধনের ভোট কাটতে আসরে নেমেছিল এমআইএম। তবে দিনের শেষে ৫টি আসন জেতায় ওয়েইসির মন্তব্য, ‘‘যাঁরা এমন কথা বলেছিলেন, তাঁদের যোগ্য জবাব দিয়েছি।’’ এ বার মহাগঠবন্ধনকে সমর্থন করবেন কি না, এই প্রশ্নে ওয়েইসির বক্তব্য, চূড়ান্ত ফল ঘোষণার পরেই সিদ্ধান্ত।
তবে ক্ষমতার দোরগোড়ায় থেমে গেলেও এ বারের ভোটে নেতা হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে পেরেছেন তেজস্বী যাদব। বাবা লালু প্রসাদের অনুপস্থিতিতে যে ভাবে সামনে থেকে লড়াই করেছেন, তা বাহবা কুড়িয়েছে রাজনৈতিক মহলের।
Post A Comment:
0 comments so far,add yours