গত 9/10/2020 তারিখ ঢোলাহাট থানার দরি কৌতলা গ্রামের জনৈক শাহেনশাহ নেগাবান নিজ বাড়ি থেকে রহস‍্যজনক ভাবে নিখোঁজ হন। 11/10/2020 তারিখ তার স্ত্রী ফেরদৌসি নেগাবান-এর মোবাইলে 12 লক্ষ টাকা মুক্তিপণ চেয়ে ফোন আসে। এই বিষয়ে 12/10/2020 তারিখ তিনি ঢোলাহাট থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। তদন্তে জানা যায় যে অপহৃত ব‍্যক্তিকে 
কোচবিহারের মাথাভাঙ্গায় কোনো গোপন জায়গায় লুকিয়ে রাখা আছে।এরপর সূন্দরবন পুলিশ জেলার পুলিস সুপার শ্রী বৈভব তিওয়ারি মহাশয়ের নির্দেশ মত দুটি দল তৈরি করা হয়।   প্রথম দলটি ঢোলাহাট থানার সাব ইন্সপেক্টর অনুপ মণ্ডল-এর নেতৃত্বে কোচবিহারের উদ্দেশে রওনা দেয়। অন‍্য দলটি জেলার অতিরিক্ত পুলিস সুপার শ্রী সন্তোষ মন্ডল-এর তত্বাবধানে তদন্তের গতিবিধির উপর কড়া নজর রাখেন।প্রথম দলটি কোচবিহার জেলা পুলিসের সহযোগিতায় মাথাভাঙ্গা এলাকায় তল্লাশি চালিয়ে অপহৃত শাহেনশাহ নেগাবান সহ অন‍্য দুই ব‍্যক্তি কে অপরাধীদের গোপ ডেরা থেকে উদ্ধার করে। তল্লাশিতে মূল আসামী রাতুল দেব বর্মন ও তার স্ত্রী মুনমুন গ্রেপ্তার হয়। ধৃতদের মাথাভাঙ্গা আদালতে পেশ করা হলে বিচারক তিন দিনের ট্রান্জিট রিমান্ডে কাকদ্বীপ মহকুমা আদালতে পাঠানোর নির্দেশ দেন। তদন্তে আরও জানা যায় যে ধৃত মুনমুন-এর সাথে অপর অপহৃত ব‍্যক্তি মোস্তাকিন নেগাবানের বন্ধুত্বের সম্পর্ক ছিল। ওরা দুজনে মিলে এলাকার বেকার যুবক যুবতীদের টাকার বিনিময়ে সরকারী চাকরি পাইয়ে দেওয়ার প্রতারণা চক্র ফেঁদে বসেছিল এবং তারা এলাকার বেশ কয়েক জনের কাছ থেকে কয়েক লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেয়। সম্প্রতি প্রতারিতরা টাকা ফেরত দেওয়ার জন‍্য মুনমুন কে চাপ সৃষ্টি করে। তখন মনমুন ও তার স্বামী রাতুল মিলে টাকা আদায় করার জন‍্য অপহরণের ছক কষে। সেই মত তারা মোস্তাকিনকে পুজোয় বেড়াতে যাওয়ার নাম করে মাথাভাঙ্গায় ডেকে পাঠায়। মোস্তাকিন তার বন্ধু শাহেনশাহ কে সঙ্গে নিয়ে একটি গাড়ি ভাড়া করে কোচবিহারের মাথাভাঙ্গায় যায়। সেখানে পৌঁছতেই আততায়ীরা মোস্তাকিন, শাহেনশাহ ও গাড়ির চালক আসরাফ নাইয়া কে একটা গোপন আসতানায় লুকিয়ে রাখে। সেখানে তাদের উপর শারীরিক অত‍্যাচার করা হয় এবং শাহেনশাহের মুক্তির জন‍্য 12 লক্ষ টাকা মুক্তিপণ চেয়ে তার স্ত্রী ফেরদৌসীকে ফোন করে এবং টাকা পাঠানোর জন‍্য তিনটি একাউন্ট নম্বর দেয়। পুলিশ একাউন্ট গুলির তথ‍্য যাচাই করে এবং মোবাইল ফোনের অবস্থান জেনে অপরাধীদের গতিবিধি সম্পর্কে নিশ্চিত হয়। মোস্তাকিন কে মাথাভাঙ্গা থানার অপর একটি মামলায় হাজির করানো হলে বিচারক তাকে জেল হাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন। ঘটনায় ব‍্যবহৃত গাড়িটিকেও পুলিশ উদ্ধার করেছে। এই অপহরন কাণ্ডের কিনারা হওয়ায় পুলিশের ভূমিকায় খুশি এলাকার সাধারণ মানুষ থেকে সংশ্লিষ্ট সকলে।
Share To:

kakdwip.com

Post A Comment:

0 comments so far,add yours