সরকার বলেছে, করোনা থেকে বাঁচতে হলে পরতে হবে মাস্ক। এরপর করোনা আতঙ্কের আবহে বাজারে আসে N-95 মাস্ক। করোনা সংক্রমণ থেকে বাচার সবথেকে উচ্চমানের মাস্ক হিসেবে বিবেচিত হয় সেটি। একটি শিশুকে যেমন হাতে ধরে বুঝিয়ে দিতে হয় তার কোনটা করা উচিৎ এবং সেইসঙ্গে সেই কাজটি সে কিভাবে করবে তারও একটা লম্বা ফিরিস্তি দিতে হয়। এখানেই মনে হয় ঘটছে বিপত্তি। সরকারের নির্দেশ আর জনগনের তা ঠিকমত বোঝার মধ্যে কোথাও বোধহয় ফাঁক থেকে যাচ্ছে।
‘করোনা আটকানোর সবচেয়ে ভালো মাস্ক N-95’ এই কথাটা মানুষের মনে গেঁথে গেছে। এরপরেই তিন ধরণের মানসিকতার প্রকাশ পাচ্ছে দেশজুড়ে। প্রথমত, যাদের ক্ষমতা আছে তাঁরা একগাদা গাঁটের কড়ি খরচ করে কিনে ফেলছেন N-95। আর যারা N-95 মাস্ক কিনতে পারছে না, তাঁরা ভাবছেন ‘ইশ! আমার বুঝি করোনা হয়ে যেতে পারে’। আরও একধরণের মানুষ রয়েছে যারা N-95 হোক কিমবা বাজারের সাধারণ মাস্ক, কোনটাই ব্যবহার করতে ঠিক পছন্দ করছেন না। তাঁদের বেশিরভাগেরই বক্তব্য, ‘মাস্ক পরে কি হবে? ওতে করোনা আটকায় না’।
বলা বাহুল্য, বর্তমান পরিস্থিতিতে এই তিন প্রকার ধারণাই ভুল। ভারতের স্বাস্থ্যমন্ত্রকের ডিরেক্টর জেনারেল খুব স্পষ্টভাবে একটি বার্তা দিয়েছেন। তিনি বলেন, “করোনা সংক্রমণের এই ভয়াবহ পরিস্থিতিতে সবাইকে N-95 মাস্ক পরে ঘোরার দরকার নেই। এতে হিতের বিপরীত হয়”। খোদ স্বাস্থ্যমন্ত্রক N-95 মাস্কের বিষয়ে কি বলেছে, দেখে নেওয়া যাক।
স্বাস্থ্যমন্ত্রকের ডিরেক্টর জেনারেল বলেন, “ভাল্বযুক্ত N-95 মাস্কটি বাইরে থেকে মানুষের শরীরে করোনার প্রবেশ আটকায়। কিন্তু নিঃশ্বাসের মাধ্যমে যদি কারোর দেহ থেকে করোনা বেরোয়, সেটিকে আটকাতে সক্ষম নয় N-95″। এখানেই থেমে যাননি তিনি। করোনা আবহে যথেচ্ছভাবে N-95 মাস্ক পরে ঘোরার বিরুদ্ধে তীব্র বার্তা দিয়েছেন তিনি। স্বাস্থ্যমন্ত্রকের ডিরেক্টর জেনারেল বলেন, “N-95 মাস্কের যথেচ্ছ ব্যবহার বন্ধ করুন। এখন তো স্বাস্থ্যকর্মীদের পরিবর্তে আমজনতা N-95 মাস্ক পরে ঘুরছে”।
সুতরাং, যদি করোনা আক্রান্ত কোনও ব্যক্তি নিজেই N-95 মাস্ক পরে বাইরে ঘোরেন, তাতে সংক্রমণ আটকানোর কোনও উপায় নেই। তবে করোনা সংক্রমণকালে মাস্ক পরা আবশ্যক বলে জানিয়েছেন তিনি। বাড়িতে কিমবা ছোট ব্যবসায়িক ক্ষেত্রে যারা মাস্ক তৈরি করছেন তাঁদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, “মাস্কগুলি যেন মানুষের মুখের আকারের সঙ্গে ঠিকঠাক ভাবে সেট হয়। কোনোরকম ফাঁক থাকলে ঝুঁকি বেশি”। প্রয়োজনে স্বাস্থ্যমন্ত্রকের ওয়েবসাইট থেকেও মাস্ক কেনার পরামর্শ দেন তিনি। সেইসঙ্গে মাস্ক ব্যবহার করার পর সেটিতে ফুটন্ত জলে পরিষ্কার করার কথাও বলেন তিনি।
Post A Comment:
0 comments so far,add yours