করোনার টিকা তৈরি নিয়ে বিশ্বজুড়ে প্রতিযোগিতা তীব্র। দৌড়ে এগিেয় ভারত–‌সহ বেশ কয়েকটি দেশ। অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি ও ওষুধ কোম্পানি অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা এখন পরীক্ষার শেষ পর্বে। গবেষকদের দাবি, ৮ হাজার স্বেচ্ছাসেবীর ওপর পরীক্ষা এতটাই এগিয়েছে যে প্রত্যাশার আগেই এই টিকা বাজারে আসতে পারে। ঘাড়ের ওপর নিঃশ্বাস ফেলছে আমেরিকার ওষুধ কোম্পানি মোডার্না। ভারতেও করোনার সম্ভাব্য টিকা কোভ্যাক্সিন তৈরি করে ফেলেছে হায়দরাবাদের ভারত বায়োটেক। জুলাইয়ের মাঝামাঝি শুরু হবে এই টিকার মানব শরীরে পরীক্ষা । ডিব্রুগড়ের রিজিওনাল মেডিক্যাল রিসার্চ সেন্টারে সার্স–‌কোভ–‌২ ভাইরাসকে আলাদা করে চিহ্নিত করতে পেরেছেন গবেষকেরা। এটা  টিকা তৈরিতে কাজে লাগবে। সার্স–‌কোভ–‌২ এখন গবেষণাগারেই তৈরি করা যাবে। এর আগে এই সাফল্য পেয়েছে সরকারি সংস্থা পুণের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ ভাইরোলজি ও হায়দরাবাদের সিসিএমবি। 
জার্মান সংস্থা বায়োএনটেক এবং মার্কিন ওষুধ কোম্পানি ফাইজারের যৌথ উদ্যোগে তৈরি টিকা প্রথম ট্রায়ালেই মানবদেহে পর্যাপ্ত অ্যান্টিবডি তৈরি করেছে বলে দাবি। ৩৬০ জন সুস্থ ও প্রাপ্তবয়স্কের দেহে ভ্যাকসিন ক্যান্ডিডেটের পরীক্ষামূলক প্রয়োগ শুরু হয় মে মাসে। হু জানিয়েছে, এ পর্যন্ত ১৫টি ভ্যাকসিনের শেষ পর্বের ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল শুরু হয়েছে। ৫টি চীনের, আমেরিকার ৩টি,  ব্রিটেনের ২টি, অস্ট্রেলিয়া, জার্মানি ও রাশিয়ার ১টি করে। লকডাউনের বিরোধী বলে ‘‌প্রফেসর রিওপেন’‌ নামে পরিচিত অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক সুনেত্রা গুপ্তের আশা, অধিকাংশ মানুষেরই করোনার টিকা লাগবে না। যাঁরা শারীরিক ভাবে সুস্থ, বয়স্ক নন ও শরীরে বড় রোগ নেই, তাঁরা করোনায় আক্রান্ত হচ্ছেন না। তাঁদের সাধারণ জ্বরই হয়ে থাকবে। যাদের করোনা হওয়ার সম্ভাবনা বেশি, তাদের জন্যেই টিকা ।  হু–‌র মুখ্য বিজ্ঞানী সৌম্যা স্বামীনাথন জানিয়েছেন, টিকা আবিষ্কারে এখনও পর্যন্ত এগিেয় অ্যাস্ট্রাজেনেকা। এই ভ্যাকসিন তৈরি করেছেন অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটির গবেষকেরা। এজেডডি১২২২–‌এর পরীক্ষা চলছে ব্রিটেন, দক্ষিণ আফ্রিকা ও ব্রাজিলে। এতে যে ভাইরাস কাজে লাগানো হয়েছে তাতে শ্বাসনালিতে হালকা সংক্রমণ হতে পারে। তা কম প্রতিরোধসম্পন্ন রোগীর পক্ষেও নিরাপদ। এই টিকা তৈরিতে কাজে লাগাচ্ছে ডিএনএ–‌কে। ফাইজার–‌বায়োএনটেক ও মোডার্নার টিকা তৈরিতে আরএনএ–‌কে। এই ভ্যাকসিনের ডোজে যে পরিমাণ অ্যান্টিবডি তৈরি হচ্ছে, তা হার্ড ইমিউনিটি গড়ে তুলতে পারবে বলে আশা। ফাইজারের ভ্যাকসিন রিসার্চ বিভাগের প্রধান ক্যাথরিন জ্যানসেন জানিয়েছেন, প্রথম ধাপে ১০ কোটি ভ্যাকসিনের ডোজ তৈরি হবে। সাফল্য এলে আগামী বছরের মধ্যে ১২০ কোটি ডোজ তৈরি হবে। চীনের ক্যানসিনো বায়োলজিক্স সংস্থার তৈরি টিকাও ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালে সাফল্য পেয়েছে। 
Share To:

kakdwip.com

Post A Comment:

0 comments so far,add yours