রাজ্যে করোনা সংক্রমণ ছড়ানোর সময় থেকেই বেলেঘাটা আইডি অগ্রগণ্য ভূমিকা গ্রহণ করেছিল। প্রথম থেকেই করোনা সন্দেহে রোগীদের ভর্তি, বিদেশ ফেরতদের পরীক্ষা নিরীক্ষা, অন্য রাজ্য থেকে আসা মানুষের শারীরিক পরীক্ষা-সহ যাবতীয় করোনা সম্পর্কিত কার্যকলাপ এখানেই হচ্ছিল। কিন্তু করোনা সংক্রমণ রাজ্যের বিভিন্ন সরকারি, বেসরকারি হাসপাতাল, নার্সিংহোমের চিকিৎসক, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মীদের শরীরে থাবা বসালেও, কাবু করতে পারেনি করোনা চিকিৎসার আঁতুড়ঘর হিসেবে চিহ্নিত বেলেঘাটা আইডিকে। হাসপাতালে কর্তব্যরত কেউ প্রথমদিকে করোনা আক্রান্ত না হওয়ায় অনেকটাই স্বস্তিতে ছিল কর্তৃপক্ষ।
তবে এপ্রিলের শুরুর দিকে দুই সাফাইকর্মী প্রথম করোনা আক্রান্ত হন। এরপর জুন মাসের মাঝামাঝি আইডি হাসপাতালের কর্মী আবাসনের সাত জন করোনা আক্রান্ত হওয়ার পর কিছুটা আতঙ্ক দানা বাঁধে। তারপরও পরিস্থিতি অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে ছিল।
বুধবার সেই বেলেঘাটা আইডি হাসপাতাল জুড়েই তীব্র আতঙ্ক। মঙ্গলবার আইডি হাসপাতালের ৩০ জনের লালারস পরীক্ষা করা হয়। বুধবার রিপোর্ট আসলে দেখা যায় এর মধ্যে ২৫ জনই করোনা পজিটিভ। ১৬ জন নার্স, ফার্মাসিস্ট, চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারী, ওয়ার্ড বয়, নিরাপত্তারক্ষী-সহ একসাথে ২৫ জন করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। এদের পরিবারেও বেশ কয়েকজন করোনা আক্রান্ত।
এদিকে বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালে ১১৫টি করোনা বেড থাকায় আক্রান্ত সবাইকে ভর্তি নিয়ে জটিলতা তৈরি হয়। বিক্ষোভ দেখায় আক্রান্তরা ও তাদের পরিবারের সদস্যরা। আক্রান্ত অনেকেরই বক্তব্য, পর্যাপ্ত সুরক্ষা ছাড়াই কাজ করতে হচ্ছে। তাঁদের দাবি, করোনা আক্রান্ত হওয়ার পরেও সবাই আইডি হাসপাতালে যদি ভর্তি না হতে পারেন, তবে কেন এতো ঝুঁকি নিয়ে কাজ করবেন তাঁরা!
তবে একসঙ্গে ১৬ জন নার্স আক্রান্ত হওয়ার পরেও পরিষেবায় কোনও সমস্যা হবে না বলে জানিয়েছেন বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালের উপাধ্যক্ষ আশিষ কুমার মান্না। তাঁর মতে, হাসপাতালের যা পরিকাঠামো, তাতে কোনও কর্মীর আতঙ্কিত হওয়ার কারণ নেই। স্বাস্থ্য দফতর প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। রোগী পরিষেবা অক্ষুণ্ণ থাকবে।
Post A Comment:
0 comments so far,add yours