মা হাতে পেল মৃত ছেলের উচ্চমাধ্যমিকের মার্কসীট। চারটি হাসপাতাল ঘুরে চিকিৎসা পাওয়া যায়নি। শ্বাসকষ্টে ছটফট করতে করতে এক সপ্তাহ আগে, গত শুক্রবার মৃত্যু হয়েছে শুভ্রজিতের। তাঁর মা পরদিনই চার হাসপাতালকে ছেলের মৃত্যুর জন্য কাঠগড়ায় তুলে পুলিশে অভিযোগ করেছিলেন। মা বলেছিলেন, তাঁর ছেলের মৃত্যু আসলে 'কোল্ড ব্লাডেড মার্ডার'।

দেখে নিও, উচ্চ মাধ্যমিকে এত ভালো রেজাল্ট করব যে টিভিতে দেখাবে, কাগজে ছবি বেরোবে !

শ্রাবণীর আক্ষেপ, 'ছেলে কথা রাখল। আমরা ওকে দেওয়া কথা রাখার সুযোগই পেলাম না।'

বছর দুয়েক আগে মাধ্যমিকে আশানুরূপ ফল না-হওয়ার পর মা-বাবাকে এমনই কথা দিয়েছিল ইছাপুরের শুভ্রজিৎ চট্টোপাধ্যায়।

অকালে হারানো সন্তানের মার্কশিট হাতে কান্নায় ভেঙে পড়েছেন বাবা বিশ্বজিৎও। সকাল থেলে স্ত্রীর সঙ্গে চোখ রেখেছিলেন টিভির পর্দায়। কখন ছেলের রেজাল্ট বেরোবে। শুক্রবার বিকেলে ছেলের নম্বর (৩৬০) জানার পর বিশ্বজিৎ বলেন, 'ভালো রেজাল্ট করে ও সবাইকে দেখিয়ে দেবে বলেছিল। সেটাই ও করে দেখাল। কিন্তু কিছু চিকিৎসকের অপদার্থতায় ওকে অকালে চলে যেতে হল। বলেছিল এত ভালো রেজাল্ট হবে যে টিভিতে, খবরের কাগজে ওকে দেখাবে। ও মরে গিয়ে সেটাই আজ সত্যি হল'। শুভ্রজিতের প্রতিবেশীদেরও চোখের জল বাঁধ মানছে না।শুক্রবার সকালে উচ্চ মাধ্যমিকের ফল বেরনোর পর থেকে টেলিভিশনে শুভ্রজিতের ছবি। মার্কশিটে ৭২% নম্বর। ভালো রেজাল্ট করে মা-বাবাকে দেওয়া কথা রেখেছে ছেলেটা।

কিন্তু মেধাতালিকায় উঠে নয়।
মারা গিয়ে!

এ দিন ইছাপুর নেতাজিপল্লির বাড়িতে সেই ছেলের ছবি আর অ্যাডমিট কার্ড বুকে আঁকড়েই মা শ্রাবণীর বিলাপ, 'ছেলে কত বকাঝকা, মার খেয়েছে আমার কাছে। টিউশনে পড়তে গেলে পড়া বুঝত না। অনেক কষ্ট করে আমি পড়িয়েছি। মাধ্যমিকে ভালো ফল না হওয়ায় উচ্চমাধ্যমিকে ভালো ফলের আব্দার করেছিলাম। কথা দিয়েছিল, ভালো ফল করবেই। সঙ্গে পাল্টা আব্দার ছিল, পরীক্ষার ফল বেরনোর পর বাড়িতে রান্না হবে না। আমি, ওর বাবা এবং এক দিদিকে নিয়ে ব্যারাকপুরের একটা নামী রেস্তোরাঁয় বিরিয়ানি খেতে নিয়ে যেতে হবে। আর একটা ভালো মোবাইলও উপহার চাই।'

যে ইছাপুর আনন্দমঠ হাইস্কুল থেকে উচ্চমাধ্যমিক দিয়েছিল শুভ্রজিৎ, সেই স্কুলের শিক্ষিকা পাপিয়া নন্দী এ দিন বলেন, 'খুবই খারাপ লাগছে। ইলেভেনে শুভ্রজিৎ পড়াশোনায় ফাঁকি মারত, দুষ্টুমিও করত। কিন্তু তার পরে আমাদের কথা দিয়েছিল, ভালো রেজাল্ট করবে। অনেক ভালো হয়ে গিয়েছিল শুভ্রজিৎ। ওর পরিবর্তন অন্য ছাত্রদের কাছে আমাদের উদাহরণ হয়ে গিয়েছিল। আজ ও আমাদের মধ্যে নেই, এটা ভাবতেও পারছি না।'
বছর দুয়েক আগে মাধ্যমিকে আশানুরূপ ফল না-হওয়ার পর মা-বাবাকে এমনই কথা দিয়েছিল ইছাপুরের শুভ্রজিৎ চট্টোপাধ্যায়।

অকালে হারানো সন্তানের মার্কশিট হাতে কান্নায় ভেঙে পড়েছেন বাবা বিশ্বজিৎও। সকাল থেলে স্ত্রীর সঙ্গে চোখ রেখেছিলেন টিভির পর্দায়। কখন ছেলের রেজাল্ট বেরোবে। শুক্রবার বিকেলে ছেলের নম্বর (৩৬০) জানার পর বিশ্বজিৎ বলেন, 'ভালো রেজাল্ট করে ও সবাইকে দেখিয়ে দেবে বলেছিল। সেটাই ও করে দেখাল। কিন্তু কিছু চিকিৎসকের অপদার্থতায় ওকে অকালে চলে যেতে হল। বলেছিল এত ভালো রেজাল্ট হবে যে টিভিতে, খবরের কাগজে ওকে দেখাবে। ও মরে গিয়ে সেটাই আজ সত্যি হল'। শুভ্রজিতের প্রতিবেশীদেরও চোখের জল বাঁধ মানছে না।
Share To:

kakdwip.com

Post A Comment:

0 comments so far,add yours