কতকিছুই না আছে ইতিহাসে। ছাতার উপত্তি কোথা থেকে? ইতিহাসবিদরা মনে করেন, চিন, ভারত, ও আদি গ্রিস ও মিশরে প্রাচীন কালে ছাতার ব্যবহার ছিল। কিন্তু ইউরোপে ছাতার ব্যবহার করা হত না। তবে একসময় বাঁশ ও পাতা দিয়ে ছাতার মতো একটা জিনিস তৈরি করা হয়, যা আধুনিক ছাতার আকারে নয়। কিন্তু ইংল্যান্ডে সেটি ব্যবহার করতেন শুধু মহিলারা। পুরুষদের সেই ছাতা ব্যবহার নিষিদ্ধ না থাকলেও পুরুষুত্ব বিরোধী বলেই প্রচলিত ছিল। তাই ছাতার ব্যবহার তখনও জনপ্রিয় হয়নি। তৈরি হয়নি আধুনিক ছাতাও।
সেই প্রথা ভাঙলেন ইংল্যান্ডের প্রথম পুরুষ ‘ছত্রধর’ জোনাস হ্যানওয়ে। ইংল্যান্ডের আগে ফ্রান্সে ছাতা ব্যবহার করা হত। কিন্তু ইংল্যান্ডের মানুষ ফ্রান্সের সেই আচরণকে নিম্নমানের মনে করতেন। একদিন ফ্রান্স থেকে ফিরে জোনাসও ইংল্যান্ডের রাস্তায় ছাতা মাথায় বেরিয়ে পড়লেন। গোটা দেশে, প্রথম একজন পুরুষ মানুষ যাঁর মাথায় রয়েছে আধুনিক ছাতা! তাঁকে দেখে লোকের তো চক্ষু চড়কগাছ! এ কি, পুরুষ হয়ে কেউ ছাতা ব্যবহার করে?
শুধু কি তাই? শোনা যায় সেই সময়ে ইংল্যান্ডের রাস্তায় আমাদের এখানকার পরিচিত টমটমের মতো একধরনের গাড়ি চলত। ঢাকা ঘোড়ার গাড়ি। বৃষ্টি হলে, বরফ পড়লে সাধারণ মানুষ ওই গাড়ি ব্যবহার করতে বৃষ্টি থেকে বাঁচতে। কিন্তু ছাতার ব্যবহার শুরু হলে তো সেই গাড়ির ব্যবসা লাটে উঠবে। তাই লন্ডনের রাস্তায় জোনাসের ওপর চড়াও হলেন ঘোড়ার গাড়ির ব্যবসাদাররা। একদিন রাস্তা দিয়ে আপন মনে যেতে যেতে তাঁর দিকে ঢিল ছুড়ে মারে ঘোড়ার গাড়ির চালক। একদিন তো তিনটি গাড়ি একসঙ্গে এসে চাপা দিয়ে মারতে চেয়েছিল জোনাসকে। কোনওমতে ছাতা সামলে তিনি বেঁচেছিলেন। কিন্তু ছাতা তিনি ছাড়েননি।
বলা হয়, তিনিই প্রথম আধুনিক ছাতার ব্যবহার শুরু করেন, এবং জনপ্রিয় করেন। আজ থেকে প্রায় ৩০০ বছর আগে। সমস্ত প্রথা ভেঙে তিনি সেদিন রাস্তায় বেরিয়ে সাধারণ মানুষকে বুঝিয়েছিলেন, ছাতার ব্যবহার করা কতটা সহজ এবং উপকারী!
Post A Comment:
0 comments so far,add yours