ইন্ডাস্ট্রিতে গায়ক হিসেবে নাম কারেছেন ভালই। তবে বিতর্ক যেন কিছুতেই পিছু ছাড়ে না গায়ক মিকা সিংহের। কখনও রাখি সবন্তকে জোর করে চুমু, আবার কখনও বা এক ডাক্তারকে সজোরে থাপ্পড়... মিকা মানেই বিতর্ক।
মিকার জন্ম কিন্তু এ রাজ্যে, দুর্গাপুরে। ছয় ভাইয়ের মধ্যেই তিনিই সবচেয়ে ছোট। গান ছিল তাঁর রক্তে। বাবা অজমেঢ় সিংহ ভারতীয় শাস্ত্রীয় সঙ্গীত শিল্পী। পঞ্জাবের গুরুদ্বারে যিনি দীর্ঘ দিন গান গেয়েছেন। দাদা দালের মেহেন্দিও প্রতিষ্ঠিত শিল্পী।
তাঁর কেরিয়ার শুরু হয় ২০০৬ সাল থেকে। ‘আপনা স্বপনা মানি মানি’ থেকে হালফিলে ‘সিম্বা’ ছবির ‘আঁখ মারে’— মিকা সবেতেই সুপারহিট। তাঁর লাইভ অনুষ্ঠান মানেই প্রচুর লোক, শিসধ্বনি আর নাচ। পার্টি সংয়ের রাজা তিনি। কিন্তু ব্যক্তিগত জীবনে বারে বারে এমন কিছু ঘটনা ঘটিয়েছেন তিনি যে, বারেবারেই পেজ থ্রি’র হেডলাইন দখল করেছে তাঁর নাম।
নিজের জন্মদিনের পার্টিতে রাখি সবন্তকে আচমকাই সবার সামনে জোর করে চুমু খেয়েছিলেন মিকা। তা নিয়ে কম জলঘোলা হয়নি। রাখি তো রীতিমতো শ্লীলতাহানির অভিযোগ এনেছিলেন মিকার বিরুদ্ধে। মিকা বলেছিলেন রাখিকে নাকি তিনি ‘উচিত শিক্ষা’ দিয়েছিলেন। কী হয়েছিল?
পার্টিতে বলিউডের ঘনিষ্ঠ কিছু বন্ধুকে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন মিকা। সে সময় রাখির বয়ফ্রেন্ড ছিলেন সঙ্গীত পরিচালক আশিস শেরউড। আশিস আবার মিকারও ভাল বন্ধু। পার্টি ভালই চলছিল। আচমকাই রাখিকে জড়িয়ে ধরে চুমু খেতে শুরু করেন মিকা।
মিকার কথায়, “রাখিকে আমি আমন্ত্রণই জানাইনি। আশিসের সঙ্গেই ও এসেছিল। পার্টিতে শুরু থেকেই ও আমার সঙ্গে একটু বেশি ফ্রেন্ডলি হতে চাইছিল। আমি যদিও বিশেষ পাত্তা দিচ্ছিলাম না। আমি সবাইকে বলেছিলাম আমায় যেন কোনও ভাবেই মুখে কেক না মাখানো হয়। আমার অ্যালার্জি রয়েছে।”
মিকা আরও বলেন, “সবাই সে কথা শুনলেও রাখি শোনেনি। ও আচমকাই আমার মুখে কেক মাখাতে শুরু করে। তাই ওকে শিক্ষা দিতেই চুমু খেয়েছিলাম।” যদিও মিকার এই বয়ানে নিন্দায় ফেটে পড়েছিলেন নেটাগরিকরা। ‘উচিত শিক্ষা’ দেওয়ার অর্থ চুমু খাওয়া? প্রশ্ন তুলেছিলেন তাঁরা।
যদিও এর পরেও মিকার হাবভাবে এতটুকু পরিবর্তন আসেনি। তিনি তাঁর ‘শিক্ষা দেওয়া’ বয়ানে ছিলেন অনড়। এ তো গেল একটি উদাহরণ। কিন্তু জানেন কি শুধু সলমনই নন, ‘হিট অ্যান্ড রান’ মামলায় নাম জড়িয়েছে মিকারও? এক অটোকে ধাক্কা মেরে পালিয়ে যাওয়ার অভিযোগ রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে। সেই ঘটনায় অটোতে বসে থাকা যাত্রীরাও বেশ আহত হয়েছিলেন।
শুধু জোর করে চুমু খাওয়াই নয়। বলিউডে ব্রেক দেওয়ার নাম করে দুবাইয়ের ১৭ বছরের এক নাবালিকার সঙ্গে অভব্য আচরণ এবং অশ্লীল ছবি পাঠানোর অভিযোগ উঠেছিল তাঁর বিরুদ্ধে। জল গড়িয়েছিল পুলিশ অবধি। মিকার বিরুদ্ধে সেই মামলা আজও চলছে।
গায়কের মুখপাত্র সংবাদ মাধ্যমে যদিও দাবি করেন, “এ অভিযোগ মিথ্যে। পুলিশের সঙ্গে সব রকম সহায়তাই করছেন মিকা। সত্যিটা খুব শীঘ্রই বেরিয়ে আসবে।” কিন্তু বিতর্ক কি আর চেপে রাখা যায়?
এখানেই শেষ নয়। মিকার জীবনে ঝামেলার তালিকা অনেকটাই লম্বা। তিনি যে বদরাগী, সে কথা তাঁর ঘনিষ্ঠরাও একবাক্যে স্বীকার করে নেন। ২০১৫ সালে এক লাইভ অনুষ্ঠানে এক ডাক্তারের সঙ্গে বচসায় জড়িয়ে পড়েন তিনি।
হঠাৎই সেই ডাক্তারকে সকলের সামনে সপাটে চড় মেরে দেন মিকা। চড় এত জোরে ছিল যে, সেই ডাক্তারের কানেরও বেশ ক্ষতি হয়েছিল।
রেগে যাওয়া বা জোর করে চুমুই নয়, তালিকায় রয়েছে অবৈধ ভাবে বিদেশি মুদ্রা বহন করার অভিযোগও। ২০১৩ সালে সে জন্য মুম্বই বিমানবন্দর থেকে তাঁকে গ্রেফতারও করা হয়েছিল।
১২ হাজার মার্কিন ডলার বহন করছিলেন তিনি। এক সঙ্গে এত বিদেশি মুদ্রা বহন করার অনুমতি না থাকায় মিকা গ্রেফতার হন।
যদিও আপাত ভাবে মিকাকে দেখলে বোঝা দায়, তাঁর এই ৪৩ বছরের জীবনে এত বিতর্ক। তাঁর ফাঙ্কি স্টাইল আর পার্টি সং নিয়ে মিকা আছেন তাঁর নিজের ছন্দেই।
Post A Comment:
0 comments so far,add yours