কোনও বস্তুর উপরিতল বা সারফেস থেকে ভাইরাস ছড়ায় না। ওসব জায়গায় এক দিনের বেশি ভাইরাস থাকে না।
নিউ জার্সির রুটগার্স ইউনিভার্সিটির মাইক্রোবায়োলজির অধ্যাপক ইমানুয়েল গোল্ডম্যান 'দ্য ল্যানসেট' জার্নালে বলেছেন, 'জড়বস্তু থেকে সংক্রমণ ছড়ানোর সম্ভাবনা খুবই কম। সংক্রমিত কোনও ব্যক্তি মাটিতে বা মেঝেয় নাকের ময়লা কিংবা থুতু ফেলার পরই কেউ তা মাড়িয়ে ফেললে বিপদ। এক-দু'ঘণ্টার মধ্যে হলে, তবেই।'
গবেষণা বলছে, কোনও বস্তুর উপরিতল বা সারফেস থেকে ভাইরাস ছড়ায় না। ওসব জায়গায় এক দিনের বেশি ভাইরাস থাকে না। আসলে করোনাভাইরাস ছড়ায় যত্রতত্র নাক ঝাড়া, থুতু ফেলায়। সংক্রমণ এড়াতে বার বার হাত ধোয়ার থেকেও বেশি জরুরি মাস্কের যথাযথ ব্যবহার, সামাজিক দূরত্ববিধি পালন।
আমেরিকার সান ফ্রান্সিসকোর ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিসিন বিভাগের অধ্যাপক মনিকা গান্ধীর কথায়, 'কোনও জিনিসের উপরিতল অর্থাত্ সারফেস থেকে ভাইরাস ছড়ায়, এই ধারণা অযৌক্তিক। সাধারণত সারফেসে থাকা ভাইরাস মানুষকে অসুস্থ করে তোলার মতো শক্তিশালী হয় না। অতিমারির গোড়ায় সংক্রমণ ছড়ানো নিয়ে সাঙ্ঘাতিক আতঙ্ক ছিল। সুরক্ষার জন্য হাত ধোয়া, জীবাণুনাশক স্প্রে করায় গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। তবে তার চেয়েও বেশি গুরুত্বপূর্ণ হল মাস্কের ব্যবহার, সামাজিক দূরত্ব রেখে চলাফেরা। আমরা জেনেছি, কোনও জিনিসে হাত দেওয়ার পর চোখে হাত দিলে ভাইরাস ছড়ায় না।
ভিন্ন সুর সাদাম্পটন ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক উইলিয়াম কিভিলের গলায়। তঁার বক্তব্য, সাবধানের মার নেই। হাসপাতালের মেঝে নিয়মিত জীবাণুনাশক দিয়ে পরিষ্কার করা উচিত। পরীক্ষায় দেখা গেছে, সারফেসে জীবাণুনাশক যথেষ্ট কার্যকর। এক দিন হলেও, জড়বস্তুর উপরিতলে ভাইরাস থাকে।
লিচেস্টার ইউনিভার্সিটির রেসপিরেটরি সায়েন্সের সহকারী অধ্যাপক ড. জুলিয়ান তংয়ের কথায়, 'বিভিন্ন মাধ্যমে সংক্রমণ ছড়াতে পারে। হাত ধোয়াও দরকার। হাত ধোয়ার ওপর শ্বাসপ্রশ্বাসের রোগ ছড়ানোর ঝঁুকি ১৬ শতাংশ কমতে পারে। অন্য বিধিনিষেধ পালনও জরুরি। বিপদ রয়েছে মুখোমুখি কথাবার্তায়। সারফেস সাফাইয়ে গাদা-গাদা টাকা খরচ করার বদলে গোড়া থেকে হাত ধোয়ার পাশাপাশি মাস্কের জন্য খরচ করলে ইওরোপ, উত্তর আমেরিকায় অতিমারীর দাপট দেখতে হত না।'
Post A Comment:
0 comments so far,add yours